Monday 18 July 2016

আই এস আই এল, আই এল, আল কায়দা এদের চরিত্র



    আই এস আই এল, আই এল, আল কায়দা 


    আল কায়েদা , তালেবান , বোকো হারাম , আই এস আই এস ইত্যাদি ইসলামী উগ্র পন্থী দলের নাম বর্তমান দুনিয়ায় জানে না এমন লোক খুজে পাওয়া যাবে না। আত্মঘাতী হামলা , নারী অপহরন , বোমা হামলা , গনহত্যা ইত্যাদি ঘটনা নিয়মিত ঘটিয়ে প্রতিদিনই খবরের শিরোনাম হয়। কিন্তু এরা আসলে কারা ?

    অধিকাংশ সাধারন মুসলমান সাধারনত: নিরীহ ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করে , নিয়ম করে ধর্ম কর্ম পারলে পালন করে ,না পারলে করে না - এটা নিয়ে অতি বেশী হা হুতাশও করে না। এরা মনে প্রানে বিশ্বাস করে ইসলাম হলো শান্তির ধর্ম, তবে কিভাবে শান্তির ধর্ম সেটা এরা কখনও কোরান হাদিস পড়ে জানে না , জানার তেমন দরকার বোধও করে না। জন্ম সূত্রে এই সব সাধারন মুসলমানরা মসজিদের ইমামের কাছ থেকে যা জানে সেটাই মেনে চলে। দৈনন্দিন জীবনের ব্যস্ততায় এর বেশী জানার সময় কম , আগ্রহও নেই। ভাবে যেটুকু শুনে শুনে জেনেছে তাতেই জীবন চলে যাবে।

    সমস্যাটা হয় তখন, যখন ইসলামের নামে কোন গ্রুপ , দল বা কেউ ব্যাক্তিগত ভাবে আত্মঘাতী হামলা বা বোমা হামলা করে বা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নিয়ে সাধারন নিরীহ মানুষ হত্যা করে। যেমন উপরের উগ্র পন্থি ইসলামী দলগুলো প্রায়ই এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে থাকে এবং এখনো বীর দর্পে করে যাচ্ছে। সাধারন মুসলমানেরা তখন পড়ে বিপদে, কারন তাদের বিশ্বাস করা শান্তির ধর্ম ইসলামের ধারনাটা চ্যলেঞ্জের সামনে পড়ে। সাথে সাথেই তারা প্রতিবাদ করে ওঠে উক্ত সব সন্ত্রাসী দলগুলো ইসলামের নামে সন্ত্রাস করে ইসলামের বদনাম করছে। এদেরই মধ্যে কিছু কিছু চালাক লোক তখন নানা রকম তত্ত্ব আবিস্কার শুরু করে যে , এসব উগ্রপন্থি দল আসলে আমেরিকা বা ইহুদিদের সৃষ্টি এবং তারাই মূলত: ইসলামকে খারাপ ভাবে দেখানোর জন্য কিছু লোক দিয়ে এ ধরনের ষড়যন্ত্র করছে। একই সাথে দেখা গেছে - আল কায়েদা যখন ২০০১ সালে নিউইয়র্কের বিশ্ব বানিজ্য কেন্দ্র ধ্বংস করেছিল - এরা বেশ আত্মসুখ অনুভব করেছে , অনেকেকেই বলতে শোনা গেছে ওসামা বিন লাদেন একজন বীর ইসলামী সেনানী। এদের কেউ যখন ইসরাইলের মধ্যে আত্মঘাতী বোমা মেরে কিছু ইহুদী নিধন করে , তখন এরাই কিন্তু বেশ খুশী হয়ে যায়। তখন আর এরা ইসলামের নামে সন্ত্রাস করে ইসলামের বদনাম করে না।

    ইসরাইল যখন হামাসকে দমন করতে গিয়ে নারী ও শিশু হত্যা করে ফেলে যদিও সেটা ক্রস ফায়ারে পড়ে , তখন এরা তারস্বরে চিৎকার শুরু করে ইহুদিদেরকে বর্বর হিসাবে আখ্যায়িত করে, প্রতিটি মুসলমান দেশে মিছিল ও প্রতিবাদের ঝড় বয়ে যায়। কিন্তু নাইজেরিয়াতে বোকো হারাম যখন ৩০০ খৃষ্টান ছাত্রী অপহরন করল , এরা সবাই মুখে কুলুপ এটে বসে থাকল।একটা মুসলমান দেশ এগিয়ে গেল না তাদেরকে উদ্ধার করতে , শেষ মেষ আমেরিকাকেই যেতে হলো তাদেরকে উদ্ধার করতে। তালেবানরা যখন একের পর এক আত্মঘাতী বোমা হামলা করে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে সাধারন মানুষ হত্যা করে , তখন এরা মুখে কুলুপ এটে বসে থাকে। বর্তমানে শিয়া ও সুন্নিরা যে সিরিয়াতে গত তিন বছরে ভ্রাতৃঘাতী যুদ্ধে তিন লাখের মত মুসলমান হত্যা করল , এদের কারও কাছ থেকে কোন প্রতিবাদ আসে না। বরং দেখা যায় যারা সুন্নি তারা শিয়াদেরকে কাফের বলে গালি দেয় আর যারা শিয়া তারাও একই ভাবে গালি দেয় সুন্নিদেরকে। সর্বশেষে কোন রকম উস্কানী ছাড়াই আই এস আই এস ইরাকের ব্যাপক অংশ দখল করে সেখান থেকে অমুসলিমদেরকে হত্যা করছে , তাদেরকে তাড়িয়ে দিচ্ছে , এমন কি তারা শিয়াদেরকে পাইকারী হারে হত্যা করছে , তখনও এই সব সাধারন মুসলমান চুপ। কোন টু শব্দ নেই।

    এখন প্রশ্ন হলো এসব উগ্র পন্থি মুসলমান দল যদি ইহুদি বা আমেরিকার চর হয়ে থাকে এবং তারা যদি ইসলামের নামে ইসলাম বিরোধী কাজ করে ইসলামের বদনাম করার ষড়যন্ত্র করে থাকে , তাদের এহেন বর্বর হত্যাকান্ডের ব্যাপারে তারা টু শব্দটি কেন করে না ? কেন রাস্তায় নেমে এসে প্রতিবাদ করে না ? কেন তারা প্রতিবাদ করে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করে তাদেরকে দমন করার জন্য কোন পদক্ষেপ নেয় না? সাধারন লোকজন কেন তখন চুপ থাকে? অথচ এরাই কিন্তু ইসরাইল যদি ফিলিস্তিনীদেরকে হত্যা করে বা বার্মায় যদি মুসলমানরা নির্যাতিত হয় তখন বিপুল বিক্রমে রাস্তায় নেমে আসে।

    তাহলে এ থেকে আমরা কি বুঝব ? 

    No comments:

    Mobile

    Pages